অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড স্কিলড ইন্ডিপেন্ডেন্ট ভিসা – সাব ক্লাস ১৮৯/জেনারেল স্কিলড মাইগ্রেসন (ওয়ার্ক পারমিট সহ পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি) আবেদন করার বিস্তারিত।

সবাইকে প্রথমেই ঈদের শুভেচ্ছা আর অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের সাথে থাকার জন্য। পর্তুগাল, কানাডার পর এবার আমি আপনাদেরকে অস্ট্রেলিয়ার ব্যপারে জানাব। আরও মজার বিষয় হল এই একই ভিসা দিয়ে আপনি অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ড যে কোন দেশেই যেতে পারবেন।

আপনারা যারা কানাডাতে আবেদন করেননি বা পয়েন্ট স্কোর ৪০০ এর কম হবার কারণে আবেদন করেও কিছুটা হতাশায় ভুগছেন এই ভেবে যে শেষ পর্যন্ত এই টার্ম এ আপনারা পুল হতে ITA বা ডাক পাবেন কি না, তাদের জন্যই এই তথ্য।

আমার কাছে মনে হয়েছে কানাডা হতে এই প্রোগ্রাম এর আওতায় আমাদের দেশের স্কিলড লোকদের চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশি আর এর প্রক্রিয়াটিও কানাডার মত এতো জটিল নয়, বরং অনেক সহজ। তাছাড়া এই প্রক্রিয়ার শুরু হতে শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করতে খরছও অন্যান্য দেশ হতে তুলনামূলক কম। আর নতুন নিয়মে চলতি মাস হতে এখন প্রতি মাসেই (২০১৬ বা পরবর্তী সময় পর্যন্ত) একটি করে অটোমেটিক সর্টিং বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির মাধ্যমে লোক বাছাই করে তাদের অস্ত্রেলিয়াতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমোদন দেয়া হবে। মজার ব্যপার হল যেখানে কানাডা সরকার তাদের প্রোগ্রামের আওতায় সর্বশেষ (১২তম) ITA Issue Order বা পুল লিস্ট হতে যাদের পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি আবেদন জমা করতে মাত্র ১৫১৩ জনকে নির্বাচিত করেছে সেখানে অস্ট্রেলিয়া সরকার চলতি মাসে বা সর্বশেষ ITA Issue Order এ প্রায় ২৩০০ জনকে স্থায়ী নাগরিকত্ব আবেদন জমা দানের সুযোগ দিয়েছে।

এই প্রোগ্রাম এর আওতায় সোশ্যাল ওয়ার্কার, ডাক্তার, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, নার্স, শিক্ষক, আইটি সেক্টর এর রিলেটেড বিভাগ, পেট্রোকেমিক্যাল বিভাগ সহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল বিভাগ বা ভোকেশনাল বিভাগের কর্ম জীবীরাও আবেদন করতে পারবে। এতে প্রায় ১৯০টির মত লিস্টেড স্কিলড জব বা অকুপেশন আছে।

স্কিলড ইন্ডিপেন্ডেন্ট ভিসা -সাব ক্লাস ১৮৯/জেনারেল স্কিলড মাইগ্রেসন কি ?

এটি মূলত একটি পয়েন্ট বেইজড নির্ভর স্কিলড ওয়ার্কার মাইগ্রেসন প্রোগ্রাম যা অস্ট্রেলিয়া সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন শ্রম মন্ত্রণালয় এর অধীনস্থ অভিবাসন এবং বর্ডার নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিচালিত হয়। যার মূল উদ্দেশ্য হল অস্ত্রেলিয়ার কম জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকা বা বিভিন্ন স্টেট যেখানে প্রচুর পরিমানে চাকুরির পদ খালি রয়েছে কিন্তু দক্ষ জনবলের অভাবে তা পূর্ণ করা যাচ্ছে না সেই সকল স্থানে বিভিন্ন দেশ হতে দক্ষ জনশক্তি নিজ দেশে এনে তা পূর্ণ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত করা।

এই প্রোগ্রামটির স্কোরিং বেইজ লাইন ১৩০ পয়েন্ট এর। আর প্রাথমিক বাছাইয়ের আবেদনটি জমা দিতে হলে আপনাকে কমপক্ষে ৬০ পয়েন্ট স্কোর করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল যদি আপনার স্কোর ৭০ বা তার যত বেশি হবে আপনার এই প্রোগ্রাম এর আওতায় সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি বাড়বে।

কাদের জন্য প্রযোজ্য ?

এই প্রোগ্রামটি মূলত তাদের জন্য যাদের…যাদের অস্ট্রেলিয়ায় কোন কিছুই নেই আরও ভেঙ্গে বললে,

(ক) অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত কোন আত্মীয়স্বজন বা পরিবারের কোন সদস্য নেই বা অস্ত্রেলিয়ান ফ্যামিলি স্পন্সর নেই।
(খ) অস্ট্রেলিয়া হতে কোন জব অফার বা ওয়ার্ক পারমিট নেই বা অস্ট্রেলিয়ান কোন নিয়োগকর্তা কর্তৃক কাজের অফার বা স্পন্সর নেই।
(গ) অস্ট্রেলিয়ার কোন রাজ্য হতে কোন নমিনেশন বা ইনভাইটেশন নেই।

এই ভিসা দিয়ে বা পেলে কি করতে পারবেন অথবা এর সুযোগ সুবিধা কি ?

এই ভিসা দিয়ে বা পেলে আপনি এর সাহায্যে অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ড এর যে কোন স্থানে স্থায়ী ভাবে আজীবনের জন্য বসবাস করতে, পড়ালেখা এবং চাকুরী করতে পারবেন। আপনার ফ্যামিলিকে আপনি সাথে করে নিয়ে আসতে পারবেন।

আপনি এবং আপনার পুরো পরিবারের ফ্রি মেডিকেল সার্ভিস কভারেজ, বেকার ভাতা, শিশু ভাতা, সামাজিক নিরাপত্তা বা সোশ্যাল সিকিউরিটি সার্ভিস এর পেমেন্ট লাভ, আপনার আত্মীয়দের স্পন্সর করতে পারা এবং আরও আনুসাঙ্গিক সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এই ভিসা আপনাকে অস্ট্রেলিয়ায় আজিবন স্থায়ী ভাবে বসবাসের এবং কাজের অনুমতি দান করে।

আবেদনের যোগ্যতা ?

এই প্রোগ্রাম এ আবেদন করতে হলে আপনাকে নিম্ন লিখিত শর্ত সমূহ পূরণ করতে হবে…

১। আপনি এই প্রোগ্রাম এ আবেদন করতে ইচ্ছুক এই মর্মে একটি প্রাথমিক আবেদন জমা দিতে হবে যা Exprees of Interest বা সংক্ষেপে EOI নামে।
২। আপনি যে কাজে বা চাকুরিতে আছেন তা অবশ্যই এই প্রোগ্রাম এর নির্ধারিত স্কিলড অকুপেশন লিস্ট এ থাকতে হবে বা ঐ লিস্টের যে কোন একটি কাজে আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩। নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর নিকট হতে আপনার অকুপেশন বা কাজের বিপরীতে পজিটিভ এসেসমেন্ট ইভালুয়েশন রিপোর্ট আনতে হবে বা থাকতে হবে।
৪। আপনার বয়স সীমা অবশ্যই ১৮ এর বেশি এবং ৫০ এর কম হতে হবে।
৫। আপনাকে IELTS এ কমপক্ষে ৬ পয়েন্ট স্কোর করতে হবে বা থাকতে হবে।
৬। আপনাকে এই প্রোগ্রাম এর আওতায় কমপক্ষে ৬০ পয়েন্ট স্কোর করতে হবে।

আপনি যাদের কে আপনার সাথে নিতে পারবেন বা আপনার আবেদনের সাথে যুক্ত করতে পারবেন ?

১। আপনার পার্টনার/স্ত্রী।
২। আপনার বা আপনার পার্টনার/স্ত্রীর বাচ্চা।
৩। আপনার বা আপনার পার্টনার/স্ত্রীর নিকট আত্মীয়।

এই প্রোগ্রাম এর ভিসা প্রসেস কি ভাবে কাজ করে ?

এই প্রোগ্রামটি মূলত ৩টি ধাপে তার ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন করে থাকে।

১। এই প্রোগ্রাম এর আওতায় আবেদন করার ১ম ধাপ হল সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সংস্থা হতে আপনার কাজের (লিস্ট এ থাকা সাপেক্ষে) ইভালুয়েশন রিপোর্ট আনা। যা আপনার কাজ এবং অভিজ্ঞতার আলোকে বিচার করবে তা অস্ত্রেলিয়ার জন্য যথাযোগ্য কি না।

২। আপনি যখন একটি পজিটিভ স্কিলড এসেসমেণ্ট ইভালুয়েশন রিপোর্ট পেয়ে যাবেন তখন আপনাকে EOI এর আবেদন জমা করতে হবে।

৩। আপনি সফল ভাবে EOI জমা করে দেয়ার পর আপনার পয়েন্ট স্কোর এর উপর বেইজ করে আপনাকে ITA লেটার দেয়া হবে। এটি হাতে আসার পর DIBP এর নির্দেশনা মত বাকি ধাপগুলো সম্পন্ন করলেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব বা নিউজিল্যান্ড এ স্থায়ী ভাবে কাজের সুযোগ।

পয়েন্ট স্কোর কি এবং কি ভাবে বুঝবেন আপনি যোগ্য কি না ?

অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট স্কোর সিস্টেম এ আপনি খুব সহজেই ৬০ বা তার বেশি পয়েন্ট স্কোর করতে পারবেন। আমি আগেই বলেছি এটি কানাডা হতে অনেক সহজ।

আপনাদের বুঝার জন্য ধারনা দিই…

১। বয়স এর জন্য আপনি সর্বোচ্চ ৩০ পয়েন্ট পাবেন। যদি আপনার বয়স ১৮-২৪ হয় তবে ২৫, ২৫-৩২ হলে ৩০, ৩৩-৩৯ হলে ২৫, ৪০-৪৪ হলে ১৫ পয়েন্ট পাবেন। এর বেশি বা কম হলে কোন পয়েন্ট পাবেন না।

২। ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতার জন্য আপনি সর্বোচ্চ ২০ পয়েন্ট পাবেন। যদি আপনার IELTS Score 6 (Overall/Band) হয় তবে আপনি কোন পয়েন্ট পাবেন না কিন্তু আবেদন করতে পারবেন। যদি আপনার IELTS Score 7 (Overall/Band) হয় তবে আপনি ১০ পয়েন্ট পাবেন। যদি আপনার IELTS Score 8 (Overall/Band) হয় তবে আপনি ২০ পয়েন্ট পাবেন।

৩। আপনার অকুপেশন বা কাজ এর ক্যাটাগরির এবং এর অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে আপনি সর্বোচ্চ ২০ পয়েন্ট পাবেন। যদি বিগত ১০ বছরের মধ্যে আপনার কোন পেশাতে (লিস্টেড) ৩ বছরের বেশি কিন্তু ৫ বছরের কম অভিজ্ঞতা থাকে তবে আপনি ৫ পয়েন্ট পাবেন। যদি বিগত ১০ বছরের মধ্যে আপনার কোন পেশাতে (লিস্টেড) কমপক্ষে ৫ বছর কিন্তু ৮ বছরের কম অভিজ্ঞতা থাকে তবে আপনি ১০ পয়েন্ট পাবেন। যদি বিগত ১০ বছরের মধ্যে আপনার কোন পেশাতে (লিস্টেড) কমপক্ষে ৮ হতে সর্বোচ্চ ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকে তবে আপনি ১৫ পয়েন্ট পাবেন।

৪। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে আপনি সর্বোচ্চ ২০ পয়েন্ট পাবেন। তবে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ান এডুকেশন সিস্টেম এর সমমান বা কাছাকাছি স্ট্যান্ডার্ড হতে হবে। যদি আপনি ডক্টরেট বা Phd হোল্ডার হন তবে আপনি পাবেন ২০ পয়েন্ট। যদি আপনি অনার্স বা মাস্টার্স ডিগ্রি হোল্ডার হন তবে ১৫ পয়েন্ট পাবেন। যদি আপনার এর বাইরে কোন পোস্ট গ্রেজুয়েশন বা ডিপ্লোমা ডিগ্রি তা দেশ বা দেশের বাইরে হতে থাকলে আরও পাবেন এক্সট্রা ১০ পয়েন্ট।

৫। আপনার পার্টনার/স্ত্রীর শিক্ষাগত এবং ভাষাগত যোগ্যতার উপর বেইজ করে আপনি পাবেন আরও ৫ পয়েন্ট।

আপনার পয়েন্ট কত ?

আপনার মোট পয়েন্ট কত এর একটি সহজ হিসাব আপনি পেতে পারেন এই ভাবে…
ধরুন আপনি যে অকুপেশন এ আছেন তা অস্ট্রেলিয়ান স্কিলড অকুপেশন লিস্ট এ আছে এবং আপনি ওদের কাছ হতে একটি পজিটিভ ইভালুয়েশন রিপোর্টও লাভ করেছেন।

এখন যদি আমি ধরি আপনার অনার্স বা মাস্টার্স ডিগ্রি আছে যা অস্ট্রেলিয়ান স্ট্যান্ডার্ড এ অনার্স সমমানের। সাথে আপনার কমপক্ষে ৩ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা আছে। আপনার IELTS Score ৭। আপনার বয়সসীমা ২৫-৩২। আপনার পার্টনার/স্ত্রীর যোগ্যতাও আছে। তবে আপনার পয়েন্ট এর হিসাব দাঁড়াবে ১৫+৫+৩০+১০+৫=৬৫।

এখনো কি আপনার মনে হয় আপনি অস্ট্রেলিয়ায় চান্স পাবেন না ?? আপনার পয়েন্ট স্কোর জানতে এই লিঙ্কটি ব্যবহার করুণ http://www.border.gov.au/Trav/Visa-1/189-#

খরছ ?

আপনার স্কিলড অকুপেশন এসেসমেন্ট, IELTS, চূড়ান্ত আবেদন ফিস, মেডিকেল এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন সহ অন্যান্য সকল খরছ মিলে প্রায় ৪ লক্ষ বা তার কম। তবে আপনার প্রাথমিক আবেদন করতে শুধু ৭০/৮০ হাজার টাকা বা তার কিছু কম বা বেশি লাগবে। আর প্রাথমিক আবেদন মানে EOI এর আবেদন করার জন্য প্রয়োজন শুধু আপনার স্কিলড অকুপেশন পজিটিভ এসেসমেন্ট রিপোর্ট এবং IELTS এর সার্টিফিকেট।

কি ভাবে আবেদন করবেন বা এর ধাপ সমূহঃ

আপনি নিজে নিজেই নীচের ক্রমানুসারে বা ধাপ সমুহ এক এক করে সম্পন্ন করে এই প্রোগ্রাম এর আওতায় আপনার আবেদনটি জমা করতে পারেন।

যে ভাবে করবেন…

১। আপনার জব বা অকুপেশন লিস্টেড কিনা তা যাচাই করুণ। http://www.border.gov.au/…/Sk…/skilled-occupations-lists/SOL

২। আপনার অকুপেশন লিস্টেড হলে তা অনুমোদিত সংস্থা হতে পজিটিভ এসেসমেণ্ট রিপোর্ট এর জন্য আবেদন করুণ। এখানে এই রিপোর্ট পেতে হলে কি কি কাগজ পত্র জমা দিতে হবে এবং কত ফিস লাগবে তা ওরাই বলে দিবে।
http://www.border.gov.au/…/Skills-ass…/assessing-authorities

৩। পজিটিভ এসেসমেণ্ট রিপোর্ট এবং IELTS এই দুটি কাগজ আপনার হাতে আসার পর আপনি EOI বা Express of Interest যা প্রাথমিক আবেদন বলে ধরা হয়ে থাকে তা জমা দিন। উল্লেখ্য এখানে আপনি ৩টি ট্যাব পাবেন। এর মধ্য হতে আপনি EOI ট্যাবটি সিলেক্ট করুণ এবং নির্দেশনা মত বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুণ।
http://www.border.gov.au/Trav/Work/Skil

উল্লেখ্য আপনাকে উপরোক্ত ধাপ পর্যন্ত আসতে বা আবেদন করতে যদিও কেবল মাত্র ২টি কাগজ হাতে থাকলেই যথেষ্ট বলা হয়েছে তবুও আপনি আপনার ১ম হতে সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল রেজিস্ট্রেশন কার্ড, প্রবেশ পত্র, সার্টিফিকেট, মার্কশিট, প্রসংশা পত্র, সাথে কর্ম অভিজ্ঞতা, পে-স্লিপ (যদি থাকে), চাকুরীর নিয়োগ পত্র বা কন্ট্রাক্ট পেপার, জয়েন লেটার, অর্গানাইজেশন চার্ট সহ অন্যান্য আরও অনেক সংশ্লিষ্ট কাগজ পত্র যা আপনার এসেসিং অথোরিটির উপর নির্ভর করে সেগুলো এবং সেই সাথে মেডিকেল রিপোর্ট এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেটও তৈরি করে তা জেপিজি বা পিডিএফ যে কোন একটি ফরম্যাট এ সেইভ করে রাখুন। খেয়াল রাখবেন সেইভকৃত ফাইল এর আকার যেন ৯৬ ডিপিআই এর বেশি না হয়।

আরও একটা জিনিস বলে রাখা ভাল যদি আপনি গত ১০ বছরের ভিতর কোন দেশে এক নাগারে ১২ মাস বা তার বেশি সময় থেকে থাকেন তা হোক চাকুরী বা পড়ালেখার কাজে তবে আপনাকে সেই দেশের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লেটার বা ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেটও তৈরি করে রাখতে হবে। কারণ আপনার ফাইনাল আবেদনের সময় বা প্রসেস চলাকালীন যে কোন সময় অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষ তা দেখতে বা জমা দিতে বলতে পারে। তাই আপনার প্রাথমিক আবেদনের পূর্বেই এই সকল কাগজ তৈরি করে হাতের নাগালে রাখুন। মনে রাখবেন অস্ট্রেলিয়া সরকার পুলিশ রিপোর্ট ছাড়া আর বাকি সকল কাগজের সার্টিফাইড কপি দাখিল করতে বলবে। অর্থাৎ সকল কাগজ ফটোকপি করিয়ে তা নোটারি পাবলিক দিয়ে এটাসটেশন করিয়ে উপরেল্লেখিত পদ্ধতিতে সেইভ করে রাখবেন।

আপনি EOI জমা দেবার পর প্রথম ITA পাবার জন্য অপেক্ষা করুণ। আপনার EOI এ আপনি যত পয়েন্ট স্কোর করেছেন তার উপর ভিত্তি করে এবং আপনার আবেদন কৃত অকুপেশন খালি থাকা সাপেক্ষে আপনাকে ITA দেয়া হবে। ITA হাতে আসার পর আপনাকে ৬০ দিনের মধ্যে স্কিল সিলেক্ট এ আবেদন করতে বলা হবে। তখন আপনার আগের স্কোর কৃত পয়েন্ট এর সাথে এই আবেদনের পয়েন্ট আবার যাচাই করা হবে। তাই অবশ্যই EOI যে যে তথ্য আপনি দিয়েছেন তা ফাইনাল আবেদনের সময়ও একই তথ্য দিবেন। সেই আনুসাঙ্গিক কাগজ পত্র এর সার্টিফাইড কপি এটাচ করে জমা দিতে হবে। কেবল পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট এর অরিজিনাল স্ক্যান কপি এটাচ করে জমা দিবেন।

আপনি যদি আপনার ফাইলটি আপনি নিজে প্রসেস করতে না চান এবং তা আপনার মনোনীত কোন ব্যক্তি বা এজেন্ট কে দিয়ে প্রসেস করাতে চান তবে তা নির্ধারিত ফর্মে আবেদন করে তাদের জানাতে হবে। তখন আপনার পক্ষে ঐ ব্যক্তি বা এজেন্ট আপনার হয়ে ওদের সাথে সকল ধরণের যোগাযোগ রক্ষা করবে।

৫। আপনার প্রথম ITA এসে গেলে আপনি ৬০ দিনের ভিতর স্কিল সিলেক্ট এ আবেদন করুণ। এবং ওদের চাহিদামত সংশ্লিষ্ট কাগজ পত্র জমা দিন।
http://www.border.gov.au/Trav/Work/Skil#

আপনার এই আবেদনটি ২ বছর পর্যন্ত ওদের সিস্টেম বা ডাটাবেজ এ থাকবে। তাই এর ভিতর যদি আপনার কোন তথ্য পরিবর্তন করতে হয় বা নতুন কোন যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতা অন্তর্ভুক্ত করতে চান বা আপনার নতুন কোন ফ্যামিলি মেম্বারকে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইলে তবে তা নির্দিষ্ট ফর্ম এর মাধ্যমে আবেদন করুণ বা ইমি (Immi) একাউন্ট ব্যবহার করুণ। এই পর্যায়ে আপনি ২য় ITA এর জন্য অপেক্ষা করুণ।

আপনার ২য় ITA এসে গেলে পূর্বের ন্যায় একই ভাবে ৬০ দিনের ভিতর আপনাকে ফাইনাল বা পূর্ণাঙ্গ আবেদন করতে বলা হবে এবং সাথে আনুসাঙ্গিক কাগজ পত্র জমা দিতে হবে। যদি আপনি পর পর ২টি ITA পান এবং নির্ধারিত সময়ের ভিতর ফাইনাল আবেদন না করেন তবে সিস্টেম হতে আপনার আবেদনটি সয়ংক্রিয় ভাবে বাদ পরে যাবে। যদিও আপনি পরবর্তীতে আবার একই ITA এর ভিত্তিতে পুনরায় আবেদন করতে পারবেন কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল এবং সময় সাপেক্ষ।

আপনার ফাইনাল আবেদন জমা দেয়ার কথা বলার সাথে সাথেই আপনি ওদের নির্দেশনা মত অনলাইন এ আপনার আবেদনটি জমা করুণ এবং ওদের নির্ধারিত ফিস জমা দিন। ফিস এর হার দেখুন এই লিঙ্ক এ http://www.border.gov.au/Trav/Visa/Fees

আপনি চূড়ান্ত ভাবে সিটিজেনশিপ পাবার আগে আপনাকে একটি ইন্টারভিউ দিতে হবে। এবং আপনি পূর্বে যত ধরণের কাগজ পত্র জমা দিয়েছেন তার অরিজিনাল হার্ড কপি আপনাকে সাথে নিয়ে যেতে হবে। এই প্রক্রিয়া শেষে আপনাকে কি কি করতে হবে তা বলে দিবে।

যদিও আপনি একই সাথে কয়টি প্রাথমিক আবেদন বা EOI জমা করতে পারবেন এই ব্যপারে কোন বিধি নিষেধ নেই তবুও আমার মতে আপনার একটি আবেদন করাই ভাল।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্কঃ

১। মেডিকেল রিপোর্ট এর জন্য http://www.border.gov.au/Lega/Lega/Help/Location/bangladesh
২। আরও বিস্তারিত জানতে http://www.border.gov.au/Trav/Visa
৩। ভিসা ফিস জানতে http://www.border.gov.au/Trav/Visa/Fees

সবাইকে ধন্যবাদ।

= = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = =

ফ্রি অ্যাসেসমেন্ট বা আরও বিস্তারিত জানতে, সঠিক পরামর্শ অথবা সহযোগিতা পেতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

সতর্কতাঃ
———–
প্রদত্ত সকল তথ্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা দেশের বর্তমান ও প্রচলিত আইন বা নিয়ম অনুযায়ী। সংশ্লিষ্ট বিভাগ, সংস্থা বা সরকার তা যে কোন সময় পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন এবং বাতিল করতে করতে পারে।

© All Rights Reserved BICAVS 2012-2020

Share On

BICAVS

DISCLAIMER

Due to the periodic changes of information/requirement/document, BICAVS doesn’t provide any confirmation, guarantee or representation, express or implied, that the information contained or referenced herein is completely accurate or final. BICAVS also doesn’t assure the grant of visa for its ‘Visa logistics support’. Visa grant is the distinct decision of embassy or consulate of the respective countries.

RECENT POSTS

POPULAR POSTS