যারা এবার এইচএসসি পরিক্ষা দিচ্ছেন তাদের সবার জন্য শুভ কামনা। অনেকেই হয়তো স্বপ্ন দেখছেন দেশের বাইরের কোন ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার। এ ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের একটি দেশ হতে পারে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ আমেরিকা বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ থেকেও প্রতিবছর বেশ কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে আমেরিকায় পাড়ি জমান প্রতি বছর। কেউ রেগুলার স্টুডেন্ট হিসেবে, কেউ স্কলারশিপ নিয়ে। আসুন জেনে নেয়া যাক এ সম্পর্কীয় কিছু তথ্য।
যে সকল ডিগ্রী সমূহতে ভর্তি হতে পারবেনঃ
আমেরিকার উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে নিম্নলিখিত ডিগ্রীগুলো প্রদান করা হয়ঃ
• এসোসিয়েট ডিগ্রী
• ব্যাচেলর ডিগ্রী
• মাষ্টার্স ডিগ্রী
• পি,এইচ,ডি বা ডক্টরেট ডিগ্রী
সেমিষ্টার সময়সীমাঃ
• স্প্রিং সেমিষ্টার: জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত
• সামার সেমিষ্টার: মে থেকে জুলাই পর্যন্ত
• ফল সেমিষ্টার: আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত
আবেদন প্রক্রিয়াঃ
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত আবেদন প্রক্রিয়া অনুসরন করতে হবেঃ
• আপনার কাঙ্খিত বিভাগে আবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ সময়সীমা প্রথমে যাচাই করুন।
• আবেদন ফরম ও অন্যান্য তথ্যের জন্য সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন অফিস বরাবর লিখুন।
• বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেও আপনি আবেদন ফরম ডাউনলোড করতে পারেন।
• অ্যাডমিশন অফিস আপনাকে ভর্তি সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য জানাবে।
• কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তির পদ্ধতি চালু আছে।
• আপনি অন্তত: ১ বৎসর সময় হাতে রেখে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়াটি শুরু করুন।
• বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাধারণত ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন।
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কোর্সে ভর্তির শিক্ষাগত ও ভাষাগত যোগ্যতা এবং কোর্সের মেয়াদঃ
১। এসোসিয়েট ডিগ্রী
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ কমপক্ষে ১২ বৎসরের।
ভাষাগত যোগ্যতাঃ টোফেল স্কোর সিবিটি- ১৭৩-২৫০ অথবা আইবিটি ৬১-১০০ তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যাট, জিআরই অথবা জি ম্যাট প্রয়োজন হতে পারে।
মেয়াদঃ ২ বৎসরের পূর্নকালীন স্টাডি।
২। ব্যাচেলর ডিগ্রী
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ কমপক্ষে ১২ বৎসরের শিক্ষা সমাপন।
ভাষাগত যোগ্যতাঃ টোফেল স্কোর সিবিটি- ১৭৩-২৫০ অথবা আইবিটি ৬১-১০০ তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যাট, জিআরই অথবা জি ম্যাট প্রয়োজন হতে পারে।
মেয়াদঃ ৪ বৎসরের পূর্নকালীন স্টাডি।
৩। মাষ্টার্স ডিগ্রী
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ কমপক্ষে ১৬ বৎসরের শিক্ষা সমাপন।
ভাষাগত যোগ্যতাঃ টোফেল স্কোর সিবিটি- ১৭৩-২৫০ অথবা আইবিটি ৬১-১০০ তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যাট, জিআরই অথবা জি ম্যাট প্রয়োজন হতে পারে।
মেয়াদঃ ২ বৎসরের পূর্নকালীন স্টাডি।
৪। ডক্টরেট ডিগ্রী
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাষ্টার্স/এম,ফিল পর্যায়ের শিক্ষা।
ভাষাগত যোগ্যতাঃ টোফেল স্কোর সিবিটি- ১৭৩-২৫০ অথবা আইবিটি ৬১-১০০ তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যাট, জিআরই অথবা জি ম্যাট প্রয়োজন হতে পারে।
মেয়াদঃ ৩-৬ বৎসরের পূর্নকালীন স্টাডি।
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আপনি নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অধ্যয়ন করতে পারেনঃ
• শিল্প ও শিল্প ইতিহাস
• জীববিদ্যা
• রসায়ন
• কম্পিউটার বিজ্ঞান
• ভূ-মন্ডল ও পরিবেশ বিজ্ঞান
• অর্থনীতি
• ফিল্ম ও মিডিয়া স্টাডিজ
• ইতিহাস
• ভাষাবিদ্যা
• গণিত
• ফলিত গণিত
• পরিসংখ্যান
• আধুনিক ভাষা ও সংস্কৃতি
• সঙ্গীত
• দর্শন
• পদার্থ বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিদ্যা
• রাষ্ট্রবিজ্ঞান
• রাসায়নিক প্রকৌশল
• প্রান রসায়ন
• যন্ত্রকৌশল
• তড়িৎ প্রকৌশল
• বংশগতিবিদ্যা
• এম,বি,এ
• খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান
• আইন ইত্যাদিসহ আরো অনেক বিষয়।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
• পূরনকৃত আবেদনপত্র
• আবেদন ফি পরিশোধের প্রমানপত্র
• পূর্বতন শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের ইংরেজী সংস্করন। শুধুমাত্র অনুমোদিত যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিলিখন সম্পন্ন হতে হবে।
• স্কুল/কলেজের ছাড়পত্র
• টোফেল পরীক্ষার ফলাফলের সনদ
• প্রয়োজন সাপেক্ষে জি আর ই, স্যাট বা জি-ম্যাট এর ফলাফলের সনদ।
• পাসপোর্টের ফটোকপি
অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্যঃ
• টিউশন ফি: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই টিউশন ফি ১১০০০ থেকে ২০০০০ মার্কিন ডলার। প্রাইভেট কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই খরচ প্রায় ৩০০০০ মার্কিন ডলার
• স্নাতক পর্যায়ে গবেষনার জন্য কোন আর্থিক সহায়তা সাধারনত দেয়া হয় না।
• মাষ্টার্স ও ডক্টরেট পর্যায়ে সরকারী ও বেসরকারী উভয় প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা রয়েছে।
বাসস্থান ও অন্যান্য খরচঃ
• মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাসস্থান ও অন্যান্য খরচ বাবদ বাৎসরিক প্রায় ৪০০০ থেকে ১০০০০ মার্কিন ডলার প্রয়োজন হয়।
চিকিৎসা বীমাঃ
• মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যয় বাৎসরিক ৫০০ থেকে ১০০০ মার্কিন ডলার।
কাজের সুযোগঃ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নকালীন চাকুরী করার কোন সুযোগ নেই; তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ক্যাম্পাসভিত্তিক চাকুরীতে নিযুক্ত হওয়া সম্ভব। তবে তার আয় দ্বারা আপনার শিক্ষাব্যয় বা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়।
সাধারণত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন ছাত্র/ছাত্রী নিম্নলিখিত কাজগুলো করে প্রতি ঘন্টায় ৬ থেকে ২৫ ডলার উপার্জন করতে পারে।
• ক্লিনিং
• নৈশ পাহারা
• ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরী বা অফিসে কাজ করা
• শিশু পরিচর্যা
• বারটেন্ডিং
• ওয়েটিং সার্ভিস
• ফল আহরণ
• পোল্ট্রি ফার্মে কাজ করা
• লন্ড্রীতে কাজ করা
সবাই ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ।
= = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = = =
ফ্রি অ্যাসেসমেন্ট বা আরও বিস্তারিত জানতে, সঠিক পরামর্শ অথবা সহযোগিতা পেতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
সতর্কতাঃ
———–
প্রদত্ত সকল তথ্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা দেশের বর্তমান ও প্রচলিত আইন বা নিয়ম অনুযায়ী। সংশ্লিষ্ট বিভাগ, সংস্থা বা সরকার তা যে কোন সময় পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন এবং বাতিল করতে করতে পারে।
© All Rights Reserved BICAVS 2012-2020